উইঘুর জোরপূর্বক শ্রমের সমাপ্তি
উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি ও মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রতি চীনা সরকারের অবমাননাকর ব্যবহার, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে বিবেচিত হয়েছে, যার ফলস্বরূপ মূখ্য পোশাকের ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা একটি গুরুতর মানবাধিকার সংকটে জড়িয়ে পড়ছে। জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (উইঘুর অঞ্চল) রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জোরপূর্বক শ্রম বহুলবিস্তৃত এবং তা আরো অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে আন্তসংযোগ স্থাপন করে, যার মধ্যে রয়েছে: গণ নির্বিচারে আটক, বাধ্যতামূলক রাজনৈতিক প্ররোচনা, জোরপূর্বক পরিবার বিচ্ছেদ, এবং ব্যাপক নজরদারি।
পোশাক ও বস্ত্র খাত বা সেক্টর চীনা সরকারের বাধ্যতামূলক শ্রম কর্মসূচির একটি কেন্দ্রবিন্দু। বৈশ্বিক পোশাক শিল্পের জন্য বাধ্যতামূলক শ্রমের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি পোশাক সেলাইয়ের স্তরে নয়, বরং তুলা এবং সুতা উৎপাদনে সরবরাহ শৃঙ্খলের বা চেইনের মধ্যে রয়েছে। হল বৈশ্বিক তুলা উৎপাদনের ২০ শতাংশ তুলা উইঘুর অঞ্চল থেকে আসে, যা একটি মর্মস্পর্শী পরিসংখ্যান দেয়:
বিশ্বব্যাপী পোশাকের বাজারে মটামুটিভাবে প্রতি পাঁচটি সুতির পোশাকের মধ্যে একটিতে উইঘুর অঞ্চলের সামগ্রী রয়েছে, এবং যা জোরপূর্বক শ্রম দিয়ে তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
পোশাকের ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা যে চারটি উপায়ে উইঘুর জোরপূর্বক শ্রম সংকটে অবদান রাখছে তা হলঃ
- ১. উইঘুর অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত পোশাক বা অন্যান্য তুলা-ভিত্তিক পণ্য তৈরির যে কোনও উৎপাদন সুবিধার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে;
- ২. উইঘুর অঞ্চলের বাইরে অবস্থিত সেইসব সংস্থাগুলির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে যেগুলির উইঘুর অঞ্চলে অবস্থিত সহায়ক সংস্থা বা অপারেশন রয়েছে এবং যেগুলি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত চীনা সরকারী ভর্তুকি এবং/অথবা নিযুক্ত কর্মীদের গ্রহণ করেছে;
- ৩. সেইসব সরবরাহকারীদের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে, যারা সরকার কর্তৃক প্রেরিত উইঘুর অঞ্চলের শ্রমিকদের উইঘুর অঞ্চলের বাইরে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগকরে।
- ৪. চীনে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহকারীদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে যে উৎস-এর অবদান উইঘুর অঞ্চলে উৎপাদিত হয়, কিন্তু ফ্যাব্রিক, সুতা বা তুলোতে সীমাবদ্ধ নয়।
এই অঞ্চলে নিপীড়ন এবং নজরদারির চরম মাত্রার কারণে, ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল বা চেইন যে জোরপূর্বক শ্রম থেকে মুক্ত রয়েছে তা নিশ্চিত করতে, সাধারণত যে প্রক্রিয়াগুলি ব্যবহার করে—যেমন শ্রম অধিকার নিরীক্ষা বা অডিট—এই প্রেক্ষাপটে তার ব্যবহারিক প্রয়োগ অসম্ভব। কারণ একজন কর্মীর পক্ষে প্রতিশোধ বা প্রতিক্রিয়ার ভয় ছাড়া একজন স্বতন্ত্র তদন্তকারীর সাথে অকপটে কথা বলা সম্ভব নয়। একমাত্র যে উপায়ে, পোশাকের ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতারা নিশ্চিত করতে পারে যে তারা উইঘুর জোরপূর্বক শ্রমে জড়িত নয় তা হল সরবরাহ শৃঙ্খল বা চেইনের যেমন তুলা থেকে শুরু করে তৈরি পণ্য পর্যন্ত্য সমস্ত স্তর কে এই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বাধ্যতামূলক শ্রম সংকটে জড়িত সংস্থাগুলির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শেষ করা।